কেমন হলো মমতার মন্ত্রিসভা?

একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে ফের বাংলার কুর্সিতে বসেছে মমতা সরকার। সোমবার কোভিড বিধি মেনে রাজভবনে হল নবনির্বাচিত মন্ত্রিসভার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। শপথ নিলেন একাধিক জয়ী বিধায়ক। মোট ৪৩ জন মন্ত্রী শপথগ্রহণ করলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারে রয়েছে একাধিক নয়া মুখও। মমতার মন্ত্রিসভায় একাধিক রদবদল করা হল। শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সরানো হল পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। শিক্ষা দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হল ব্রাত্য বসুকে। পুর দফতর থেকে সরানো হল ফিরহাদ হাকিমকে। বিদ্যুৎ দফতরের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে কৃষি মন্ত্রী করা হল শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে।

একনজরে জেনে নিন, কে কোন দফতরের মন্ত্রী হলেন। রাজ্য মন্ত্রিসভায় কে কোন দায়িত্বে?

মুখ্যমন্ত্রীর হাতে সে সমস্ত মন্ত্রণালয়গুলো রইল

* সুব্রত মুখোপাধ্যায়- পঞ্চায়েতমন্ত্রী

*পার্থ চট্টোপাধ্যায় – শিল্প, বাণিজ্য, তথ্য প্রযুক্তি, পরিষদীয়মন্ত্রী।

* অমিত মিত্র- অর্থমন্ত্রী

* সাধন পান্ডে- ত্রেতা সুরক্ষামন্ত্রী

* জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক- বনমন্ত্রী

*বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা- সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী

* মানুস ভুঁইয়া- জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী

*মলয় ঘটক- আইনমন্ত্রী

* অরূপ রায়- সমবায়মন্ত্রী

* উজ্জ্বল বিশ্বাস- কারামন্ত্রী

* শশী পাঁজা- নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী

* সৌমেন মহাপাত্র- সেচ ও জলপথমন্ত্রী।

* শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়- কৃষিমন্ত্রী

* ব্রাত্য বসু- স্কুল শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষামন্ত্রী

* ফিরহাদ হাকিম- পরিবহণ ও আবাসনমন্ত্রী

* জাভেদ আহমেদ খান- বিপর্যয় মোকাবিলা ও অসামরিক প্রতিরক্ষামন্ত্রী

* সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী- জনশিক্ষা ও গ্রন্থাগারমন্ত্রী

* বিপ্লব মিত্র- কৃষি বিপণনমন্ত্রী

* পুলক রায়- জনস্বাস্থ্য ও কারিগরীমন্ত্রী

* স্বপন দেবনাথ- প্রাণীসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী

* চন্দ্রনাথ সিনহা- ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, বস্ত্রমন্ত্রী

* গুলাম রব্বানি- সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসামন্ত্রী

* রথীন ঘোষ- খাদ্যমন্ত্রী

* অরূপ বিশ্বাস- বিদ্যুৎ, যুব কল্যাণ ও ক্রীড়ামন্ত্রী

স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী

স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী:

* বেচারাম মান্না- শ্রমমন্ত্রী

* সুব্রত সাহা- খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যানপালন

* হুমায়ুন কবীর- প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন

* অখিল গিরি – মৎস্য

* চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য- নগরোন্নয়ন, পুর বিষয়ক, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ

* রত্না দে নাগ- পরিবেশ, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও বায়ো টেকনোলজি

* সন্ধ্যারানি টুডু- পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন, পরিষদীয়

*বুলুচিক বারিক- তপশিলি উন্নয়ন

* সুজিত বসু- দমকল

* ইন্দ্রনীল সেন- পর্যটন, তথ্য-সংস্কৃতি

প্রতিমন্ত্রী

* দিলীপ মণ্ডল- পরিবহণ

*আখরুজ্জামান- বিদ্যুৎ

* শিউলি সাহা- পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন

*শ্রীকান্ত মাহাত- ক্ষুদ্র, ছোট, মাঝারি শিল্প ও বস্ত্র

* ইয়াসমিন সাবিনা- সেচ দফতর, উত্তরবঙ্গ

* বীরবাহা হাঁসদা- বন

* জ্যোৎস্না মান্ডি- খাদ্য

* পরেশচন্দ্র অধিকারী- স্কুলশিক্ষা

* মনোজ তিওয়ারি- যুব ও ক্রীড়া

পশ্চিমবাংলায় জারি হতে চলেছে রাষ্ট্রপতি শাসন?

ভোট মিটলেও পশ্চিমবঙ্গে অব্যাহত রাজনৈতিক উত্তাপ

তারিখ- ১০ মে, ২০২১

গত ২ রা মে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই বঙ্গ রাজনীতিতে শাসক ও বিরোধী সংঘর্ষে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বহু জায়গায়।

ফলাফল ঘোষণার সঙ্গেই বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা (২১২ টি আসন) নিয়ে একক দক্ষতায় আবারও ক্ষমতায় ফিরেছে তৃণমূল কংগ্রেস। অপরদিকে ৭৭ টি আসন নিয়ে প্রধান বিরোধী দলের তকমা পেয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি।

কিন্তু বিজেপির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে এই বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতার পরেও রাজ্যের দিকে দিকে বিজেপি কর্মীদের আক্রান্ত হতে হচ্ছে তৃণমূল কর্মীদের হাতে। কোথাও বিজেপি কর্মীদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হচ্ছে কথাও উঠে আসছে বিজেপি কর্মীদের দোকানপাট লুটের ঘটনা। এমনকি বিজেপির মহিলা কর্মীদের উপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে বহু জায়গায়।

আবার অপরদিকে তৃণমূলের পক্ষ থেকেও বিচ্ছিন্ন হিংসার ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও একই কথা বলেছেন। এদিন মমতা বলেন, ‘এতদিন নির্বাচনের কারণে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা কমিশনের আওতায় ছিল। এবার রাজ্যে অধীনে তা আনা হবে।’

কিন্তু কি হবে যদি বর্তমান মমতার সরকার কঠোর হাতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়? এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতি শাসনের জল্পনা সম্পূর্ণ উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে পশ্চিমবঙ্গে ইতিমধ্যেই একটি বিশেষ সদস্যের প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে কেন্দ্র গৃহ মন্ত্রণালয়। সেই বিশেষ সদস্যের প্রতিনিধিদল এর উপরেও হামলার ঘটনা ঘটে গিয়েছে ইতিমধ্যেই।

কেন্দ্রীয় সদস্য দলের ওপর হামলার সেই ভিডিও ফুটেজ(ABP NEWS থেকে সংগৃহীত)

কেন্দ্রীয় বিশেষ দলের ওপর হামলার প্রেক্ষিতে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব এর কাছ থেকে ইতিমধ্যেই রিপোর্ট তলব করেছে কেন্দ্রীয় গৃহ মন্ত্রণালয়। এই ঘটনার পরেও রাজ্যের বিভিন্ন হিংসা কবলিত এলাকায় ঘুরে বেড়িয়েছে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। বেশ কয়েক জায়গায় হিংসা সামলাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকার ও এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজ্যকে অবস্থা সামলানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতামত অনুসারে যদি রাজ্যে আইন-শৃংখলার এভাবেই অবনতি হতে থাকে এবং দিকে দিকে হিংসা বন্ধ না হয় তবে রাষ্ট্রপতি শাসন শেষ বিকল্প হতে পারে। সে ক্ষেত্রে বরখাস্ত হতে পারে বর্তমান রাজ্য সরকার।

Design a site like this with WordPress.com
শুরু করুন